দেশের বৃহত্তম গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাস চলতি জুলাই থেকে প্রিপেইড মিটার চার্জ ৪০ টাকা বাড়িয়েছে। কোম্পানিটি এতদিন মিটার চার্জ বাবদ প্রতিমাসে ৬০ টাকা করে নিত, যা জুলাই থেকে ১০০ টাকা করা হয়েছে। তবে এজন্য কোনো নোটিশ দেয়নি সংস্থাটি। এমন অভিযোগ গ্রাহকদের। তিতাসের পক্ষ থেকে চার্জ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করা হলেও এজন্য নোটিশ দেওয়ার প্রয়োজন দেখছেন না কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা।
এদিকে গত জুন থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি দাম ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা জুন থেকেই কার্যকর হয়েছে। আর প্রিপেইড মিটারে প্রতি ইউনিটের খরচ ১২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৪৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১৮ টাকা করা হয়েছে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ মোল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, একটা গ্যাসের মিটার ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকায় কিনতে হয়, যার লাইফ টাইম (মেয়াদ) হচ্ছে ১০ বছর। ৬০ টাকা করে বিল নিতে থাকলে মিটারের দাম উঠতে সময় লাগবে ৩৫ বছর। তিতাস নিজের টাকায় মিটার কিনে ৩২ বছর ধরে টাকা উসুল করবে? এটা কি খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
কোম্পানির বোর্ড সভায় এই চার্জ ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব উঠেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বোর্ড থেকে বলা হলো, ঠিক আছে- আস্তে আস্তে বাড়ান। মাত্র ৪০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাতে এত কথা উঠার কথা না। গ্রাহকের উচিৎ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া। কারণ মিটারের ফলে তার সাশ্রয় হয়েছে ৫০০ টাকা করে। এটা নিয়ে অভিযোগ আসার কথা না। বরং আমাদের সাধুবাদ দেওয়া উচিৎ।
চার্জ বৃদ্ধির দাপ্তরিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল কি-না জানতে চাইলে বলেন, নোটিশ কেন যাবে? আমরা সব মিটারের সফটওয়্যারে আপডেট করে দিয়েছি। অলরেডি গ্রাহকরা জেনে গেছে।
তিতাসের মোট ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৮ জন গ্রাহকের মধ্যে আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৭ জন। ২০২১ সালের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ গ্রাহককে মিটার প্রিপেইড পদ্ধতিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তিন লাখ ২৮ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের সুবিধা দিতে পেরেছে তিতাস। গ্যাসের অপচয় রোধে ২০১১ সাল থেকে ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিতে আবাসিক শ্রেণির গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়। আবাসিক শ্রেণিতে গ্যাসের গ্রাহক ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৯ জন।